Top News

সমঝোতা ছাড়াই তফসিল দেশকে আরো বিপদে ফেলবে: ইউট্যাব

 দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেই কোনো ধরনের সমঝোতা ছাড়াই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বালাদেশ (ইউট্যাব)। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. মোশের্দ হাসান খান বুধবার (১৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে সে বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। কেননা দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, এই দাবিতে বিগত কয়েক বছর ধরে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামও করছে তারা। একইসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশে^র বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলকে শর্তহীন সংলাপের জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহাকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এতোকিছুর পরও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা না করেই তফসিল ঘোষণা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। তাছাড়া দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপ বা সমঝোতা করা হয়নি।

নেতৃদ্বয় বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃক তফসিল ঘোষণা প্রমাণ করে তারা সরকারের তল্পিবাহক। ইসির ঘাড়ে বন্দুক রেখে সরকার তড়িঘড়ি করে আবারও একতরফা নির্বাচন করতেই একতরফা তফসিল ঘোষণা করিয়েছে। কেননা দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মী মিথ্যা গায়েবি মামলায় ঘর-বাড়ি ছাড়া। তাহলে কাকে নিয়ে নির্বাচন করা হবে? এহেন অবস্থায় একতরফা তফসিল ঘোষণা দেশকে নিশ্চিত সংঘাতের দিকেই ধাবিত করবে এবং বিপদে ফেলবে।

ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশে কোনোভাবেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তথা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে সব দলের জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। জনগণ যাতে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সেই নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে এটা প্রমাণিত হয় যে, ক্ষমতাসীন সরকার দেশের জনগণের দাবি ও বিরোধী দলের দাবি এবং গণতান্ত্রিক বিশে^র পরমাশ উপেক্ষা করতে ফের একতরফা নির্বাচনের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে সরকার প্রকারান্তরে মারাত্মক ভুল পথে হাঁটছে।

তারা ইসির উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আমরা আহ্বান জানাই, জনগণের মনের কথা বুঝার চেষ্টা করুন। জনগণ সরকারকে আর এক মুহুর্তও ক্ষমতায় চায় না। একতরফা নির্বাচন দিয়ে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া কোনো দেশপ্রেমিক মানুষের কাজ হতে পারে না। সরকারের মনোবাসনা পূরণে একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। সাংবিধানিক পদে থেকে আপনারা জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে দেশকে আরো বিপর্যয়ের দিকে পতিত করবেন না। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগ করে দেশকে রক্ষা করুন। সঙ্কট থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post